আন-নাস
আন-নাস
১১৪ :
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

বলুন, ‘আমি আশ্ৰয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের,
ফুটনোট

১১৪ :
مَلِكِ النَّاسِ

‘মানুষের অধিপতির,
ফুটনোট

১১৪ :
إِلَٰهِ النَّاسِ

‘মানুষের ইলাহের কাছে, [১]

ফুটনোট

[১] এখানে রব, মালিক এবং ইলাহ এ তিনটি গুণের অধিকারীর নিকট আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ রব, মালিক বা অধিপতি, মাবুদ সবই। সব কিছুই তাঁর সৃষ্টি, তাঁর মালিকানাধীন, তাঁর বান্দা। তাই আশ্রয়প্রার্থনকারীকে এ তিনটি গুণে গুণান্বিত মহান আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর]

১১৪ :
مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ

আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার [১] অনিষ্ট হতে,

ফুটনোট

[১] এখানে কুমন্ত্রণাদাতা বলতে মানুষের সাথে নিয়োগকৃত শয়তানের কথা বলা হয়েছে, যে সঙ্গী তাকে খারাপ কাজ করাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখে না। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই একজন শয়তান সঙ্গী নিয়োগ করা হয়েছে। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার সাথেও? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তবে আল্লাহ্ আমাকে তার উপর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেছেন ফলে তার থেকে আমি নিরাপদ হয়েছি এবং সে আমাকে শুধুমাত্র ভাল কাজের কথাই বলে।” [মুসলিম: ২৮১৪]।

১১৪ :
الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ

‘যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে,
ফুটনোট

১১৪ :
مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

‘জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে [১]।’

ফুটনোট

[১] এখানে দুটি অর্থ হতে পারে। প্রথমটি হল, শয়তান জিন ও মানুষ-উভয় প্রকার মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। এ অর্থে এখানে ناس বলে জিন ও মানুষ সকলকে বুঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় মতটি হল: কুমন্ত্রণাদাতা শয়তান জিনদের মধ্য থেকেও হয়, মানুষের মধ্য থেকেও হয়। এমতটিই শক্তিশালী। [ইবন কাসীর] অতএব সারমর্ম এই দাঁড়াল যে, আল্লাহ্ তা‘আলা রাসূলকে তাঁর আশ্রয় প্রার্থনার শিক্ষা দিয়েছেন জিন-শয়তানের অনিষ্ট থেকে এবং মানুষ-শয়তানের অনিষ্ট থেকে। জিন-শয়তানের কুমন্ত্রণা হল অলক্ষ্যে থেকে মানুষের অন্তরে কোন কথা রাখা। শয়তান যেমন মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়, তেমনিভাবে মানুষের নফসও মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপন নফসের অনিষ্ট থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা শিক্ষা দিয়েছেন। হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হে আল্লাহ্! আমি আপনার আশ্রয় চাই, আমার নফসের অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্ট থেকেও এবং তার শির্ক (বা জাল) থেকেও।” [আবু দাউদ: ৫০৬৭, তিরমিয়ী: ৩৩৯২, মুসনাদে আহমাদ: ১/৯]

0:00
0:00